বুধবার, ২৪ মার্চ, ২০১০

জাতীয় পতাকা কারো বাপের নয় যে আমরা তা ব্যবহার করতে পারবোনা।

এটিএন এর রিপোর্ট টি দেখলাম। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে বন্দী করে রাখার মাঝেই আমাদের সুখ। বড় বড় কথা বলে, অবমাননা হচ্ছে , সাধারনের জন্য নয়, আইন মানতে হবে......... ইত্যাদি আমার কাছে বাহুল্য মাত্র। এতে ইংরেজদের উপনিবেশিক মানসিকতার বহিপ্রকাশ লক্ষনীয়। যারা আজ আইনের দোহাই দিয়ে আমার, আপনার বাড়ীতে, গাড়ীতে, রিকশায় লাগানো পতাকা ঠিক হয়নি, আইন মানা হয়নি বলে চেচাচ্ছেন তাদেরকে আমার কাছে একটা ভন্ড ছাড়া আর কিছুই মনে হচ্ছেনা।

দেশ প্রেম আইন মানেনা, আবেগ বাধা মানেনা। পতাকা কারো বাপের সম্পত্তি নয় যে শুধু মন্ত্রী, এম.পি, আপার ক্লাস আমলা, জজ ব্যারিষ্টাররাই ব্যবহার করতে পারবেন।

যদি আইনের কোন ব্যত্যয় ঘটে থাকে , তাহলে আইন পরিবর্তন করতে হবে। পতাকা আমার, আপনার, রিকশা ওয়ালা, কুলি, মজুর, দোকানদার, সি,এন,জি চালক...... সোজা হিসেব সবার।

যে রিকশা চালক তার শ্রমে ভেজা টাকায় , ৩০ টাকা দিয়ে একটা পতাকা কিনে রিকশার হ্যান্ডেলে লাগিয়েছে, তার দেশপ্রেম মাপার কোন নিক্তি আপার ক্লাস আইনজীবীদের হাতে নেই। পতাকার মূল্য শুধু উনারাই দিতে জানেন!!! পতাকা যেন চোর মন্ত্রী, এম,পি, আমলাদের বাপের সম্পত্তি আর কি!!!

অতএব, আইন পরিবর্তিত হবে: আমার আবেগ নয়।

আমার কাজিনের এখন কি হবে? প্রাইভেট ছাড়া আর কোন গতি নাই!!!

আমার কাজিন ইতিমধ্যে হাফ ডজন এডমিশান টেষ্ট দিয়ে ফেলেছে। প্রতিবারই সে "খুব ভাল পরীক্ষা হয়েছে এবং এবার চান্স নিশ্চিত" আমাদের জানায়। আমরাও নিশ্চিন্ত হই, যাক বেচারীর একটা গতি হলো। অপেক্ষায় থাকি। কি হয়, কি হয়- ভাব চাচা-চাচীর মাঝে। রেজাল্ট হয়, রেজাল্ট শিটে চোখ বুলাই, রোল নাম্বার হাওয়া। হয়তো চোখের কোন দিয়ে বেরিয়ে গেলো কিনা, নিশ্চিত হওয়ার জন্য চোখের উপর আরেক দফা নির্যাতন চলে। কিন্তু ফলাফল শুণ্য।

এইবার সে আমার উপর চেপে বসে, তার একটা গতি করে দিতে হবে। চাচা-চাচীকে প্রাইভেটে পড়ানোর জন্য রাজী করাতে হবে। গতিহীন আমি কাজিনের গতির জন্য চাচ-চাচীর উপর প্রচন্ড গতিতে ঝাপিয়ে পড়ি। ওনারা বুঝে বা না বুঝে আমার গতির কাছে হার মানে। যাক, অবশেষে আমার কাজিনের একটা গতি বুঝি হলো।

কিন্তু না, আমি দূর্গতিতে পড়ি। কেননা প্রাইভেট ভার্সিটি সম্পর্কে আমার ধারনা খুবই কম। মান সম্মানের স্বার্থে প্রাইভেট থেকে আমি একটা ফ্যাশানেবল ডিগ্রী অবশ্য নিয়েছি এবং সেটা পাবলিক ভার্সিটিতে পড়াশোনা সমাপ্তির পর এবং যতটা না একাডেমিকসের জন্য তার ও বেশী অফিসের জুনিয়রদের চেয়ে পিছিয়ে পড়ার ভয়ে। আশা করি বুঝে ফেলেছেন।

আমি হলাম সবজান্তা টাইপের নো প্রবলেম ম্যান, আমার কাজিনের বিশ্বাস । যেটা আমি শিশুকালে আমার চাচার ব্যাপারে ভাবতাম। কিন্তু আমি তো জানি আমি কত অসহায় ম্যান। তাকে বললাম তুমি কিসে পড়তে চাও? সে অনেক ভেবে , বন্ধুদের সাথে আলাপ আলোচনা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলো যে, সে ফার্মাসীতে পড়বে। মেয়ে মানুষ, জবের পরিবেশটা মাথায় রেখেই নাকি তার এই সিদ্ধান্ত। চিন্তা করেন এই পুচকে মেয়ের চিন্তা কত সম্প্রসারনশীল!!! বেচারী শুধু ভর্তি যুদ্ধেই টিকলো না, না হলে ওকে ঠেকায় এমন সাধ্য কার?

ব্লগের অনেকেরই ফার্মাসী সম্পর্কে জানাশোনা থাকতে পারে, মানে- পড়ার মান, খরচা পাতি ইত্যাদি বা কোন সাজেশান যা দিয়ে আমার মান সম্মানটা আপাতত বাঁচে আর কি!!!

পরিশেষে একটা ইনফরমেশান না দিয়ে পারছিনা, আমার কাজিন কিন্তু প্রাইভেটে এডমিশান টেস্ট দিতে ও এখন ভ্য় পাচ্ছে , পাছে কোন কেলেংকারী হয়ে যায়। সত্যিই ওর কোন গতি নাই!!!